1. skmshamim11@gmail.com : Shamim ahmed : Shamim ahmed
  2. news@uttarabusinessnews.com : UTTARA BUSINESS NEWS : UTTARA BUSINESS NEWS
  3. info@www.uttarabusinessnews.com : UTTARA BUSINESS NEWS :
শুধু বিপিএলেই খেলেন যে ক্রিকেটার - UTTARA BUSINESS NEWS
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন

শুধু বিপিএলেই খেলেন যে ক্রিকেটার

প্রতিনিধির নাম :
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে

সিলেট স্ট্রাইকার্স যখন বৃহস্পতিবার রাতে এবারের বিপিএলে তাদের শেষ ম্যাচটি খেলছে মিরপুরে, জন-রাস জাগেসার তখন বিমানবন্দরে। এই ম্যাচের একাদশে তার জায়গা হয়নি। রাতেই দেশে ফেরার ফ্লাইট। তাকে আর তাই মাঠে আনেনি দল। শেষটা যেমনই হোক, খুশি মনেই দেশে ফেরার কথা এই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারের। বিপিএল খেলে কিছু ডলার-যোগ তো হলোই, তার ক্যারিয়ারও একটু সমৃদ্ধ হলো!

‘সমৃদ্ধ’ বলতে, স্বীকৃত ক্রিকেটে তার ম্যাচের সংখ্যা একটি বাড়ল। হ্যাঁ, গোটা মৌসুমে সিলেটের হয়ে স্রেফ একটি ম্যাচই তিনি খেলতে পেরেছেন। সেটাও আসলে কম নয়। এক ম্যাচ খেলার সুযোগই বা তাকে কে দেবে? বিপিএল নামক একটি টুর্নামেন্ট ছিল বলেই তো এই ৩৯ ছুঁইছুঁই বয়সেও স্বীকৃত ক্রিকেট খেলার অমৃত স্বাদ তিনি পাচ্ছেন!

জন-রাস লুক জাগেসার নামটি যদি ক্রিকেট অনুসারীদের কেউ না চেনেন, তাহলে তাকে বিন্দুমাত্র দায় দেওয়ার সুযোগ নেই। ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটেই তো এমন পরিচিত কেউ তিনি নন।বিপিএলে এমন অচেনা-অজানা অতিথি পাখিদের উড়ে আসা অবশ্য খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। এবারই যেমন শুভাম রাঞ্জানে, কাদিম অ্যালেইন, জুবাইদ আকবারি, ফারমানউল্লাহ সাফি, মার্ক ডেয়ালের মতো ক্রিকেটার এই লিগে খেললেন। প্রায় হারিয়ে যাওয়া সামিউল্লাহ শিনওয়ারি, মিগেল কামিন্সরা অস্তিত্ব জানান দিলেন এখানে।

জাগেসার তবু একটু ব্যতিক্রম। তাকে নিয়ে কৌতূহলও একটু বেশি। কারণ, স্বীকৃতি ক্রিকেট বলতে তিনি যে কেবল বিপিএলই খেলেন!

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, গত আড়াই বছরে স্বীকৃত ক্রিকেটে স্রেফ দুটি ম্যাচ তিনি খেলেছেন। দুটিই বিপিএলে!

বিপিএল ছাড়া স্বীকৃত ক্রিকেটে তার সবশেষ (এবং সম্ভবত সেটিই হয়ে থাকবে শেষ) ম্যাচটি ছিল ২০২২ সালের ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে।

এরপর হুট করেই গত বিপিএলে তাকে একটি ম্যাচ খেলতে দেখা যায় খুলনা টাইগার্সের হয়ে। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে সেই ম্যাচে দুই ওভার বোলিং করে তিনি ১৮ রান দেন। এরপর এক বছরে স্বীকৃত ক্রিকেটে আর কোনো ম্যাচ তিনি খেলার সুযোগ পাননি। তার পরও এবারের বিপিএলে জায়গা পেয়েছেন সিলেট স্ট্রাইকার্সে।মৌসুমের শুরু থেকেই দলের সঙ্গে ছিলেন তিনি। একাদশে সুযোগ পেয়েছেন একদম শেষ পর্যায়ে এসে। দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে গত সোমবারের সেই ম্যাচে ৫ রান করে বোল্ড হয়েছেন তাসকিন আহমেদের বলে। বল হাতে পারফরম্যান্স অবশ্য গতবারের চেয়ে ঢের ভালো। চার ওভারে ৩৪ রান দিয়েছেন বটে, তবে দুটি উইকেটও নিয়েছেন।

ব্যস, জাগেসারের আরেকটি বিপিএল অভিযান সমাপ্ত।

ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোতে তার প্রোফাইল বলছে, তিনি মূলত অফ স্পিনার। একসময় যে বোলিংটা খুব খারাপ করতেন না, সেটির ছাপ আছে পরিসংখ্যানে। ৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে ৩১টি উইকেট নিয়েছেন। ইনিংসে ৮ উইকেটসহ ম্যাচ ১১ উইকেটও আছে এক ম্যাচে। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ২৭ ম্যাচে শিকার ৪২ উইকেট, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ২৩ ম্যাচে ১৯টি।

তবে সেসব তো ‘কোনো এক সময়ের’ কথা। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার শেষ ম্যাচটি ছিল ২০১৬ সালে, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ২০১৯ সালে। এরপর সিপিএল খেলছিলেন টুকটাক। সেটিও শেষ ২০২২ সালে।

স্বীকৃত ক্রিকেটে জাগেসার জিইয়ে আছেন শুধুই বিপিএলে।

তার দলের ম্যানেজমেন্ট বা কোচিং স্টাফের কাছে জিজ্ঞেস করলে নিশ্চয়ই তার সম্পর্কে ইতিবাচক অনেক কথা শোনা যাবে। কিন্তু আদতে তার বোলিংয়ের মান এখন কেমন, সেটি তো ফুটে ওঠে এই আসরে তাকালেই। ম্যাচের পর ম্যাচ ধুঁকেছে সিলেট, বিদেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের ঘাটতি নিয়ে দলের কোচ-অধিনায়ক আক্ষেপ করেছেন প্রকাশ্যেই। তার পরও জাগেসারকে খেলানোর উপযুক্ত মনে করেননি তারা।

সিলেট স্ট্রাইকার্সের অনুশীলনে তাকে নেটে খেলেছেন, এমন এক ব্যাটসম্যান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, এর চেয়ে ভালো অফ স্পিনার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেই খেলেন অনেক। আরেক ব্যাটসম্যান বললেন, গোটা মৌসুমেও তিনি আদতে বুঝতে পারেননি, জাগেসার বোলার নাকি ব্যাটসম্যান।

আরও গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন অবশ্য আছে, গত বিপিএলের পর এক বছরে স্বীকৃতি কোনো ধরনের ক্রিকেটে খেলেননি যে ক্রিকেটার, তার পারফরম্যান্স কোথায় দেখা যাচ্ছে? বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি এমন একজন ক্রিকেটারের সম্পর্কে জানতে পারছে কোত্থেকে? কোন প্রক্রিয়ায় এমন ক্রিকেটারকে আনা হচ্ছে!

সিলেট স্ট্রাইকার্সের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হয়ে জানালেন, সিলেটে এবার খেলে যাওয়া ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার রাকিম কর্নওয়াল সুপারিশ করেছেন জাগেসারের নাম। স্বীকৃত ক্রিকেট না খেললেও ক্যারিবিয়ানে ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে নানা লিগে নাকি খেলে থাকেন এই ক্রিকেটার।

সেটা হতেই পারে। কিন্তু স্রেফ কারও সুপারিশ শুনে, বাস্তব অবস্থা পুরোপুরি না জেনে এভাবে একজন বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে নেওয়া যায়?

বিপিএলে অবশ্য এমন প্রশ্ন অবান্তর। এখানে এসবই স্বাভাবিক।

নিন্দুকেরা অবশ্য আরেকটি প্রশ্নও তোলেন। বিপিএলের বেশির ভাগ দলের যে আর্থিক অবস্থা, ক্যারিবিয়ান থেকে লাখ লাখ টাকা বিমান ভাড়া দিয়ে মিগেল কামিন্স বা জাগেসারদের বাংলাদেশে উড়িয়ে আনার খরচও তো দলগুলির জন্য বিষম ভার হওয়ার কথা!

অবশ্য পারফরম্যান্সে না হলেও কামিন্স-জাগেসাররা যদি অন্য কোনোভাবে পুষিয়ে দিতে পারেন, তাহলে তো এটাও লাভজনক বিনিয়োগ।

কে জানে, পরের স্বীকৃতি ম্যাচটি হয়তো আগামী বিপিএলেই খেলবেন জাগেসার!

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট