পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার বান্নু শহরে একটি সেনানিবাসে জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটেছে। এতে ১২ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৩০ জন।
বুধবার (৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ইফতারের পর দুটি বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়। বিস্ফোরণের শক্তিশালী ধাক্কায় কাছের একটি মসজিদ ও একটি বাড়ির ছাদ ধসে পড়ে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুই আত্মঘাতী হামলাকারী সামরিক স্থাপনার দেয়ালে বিস্ফোরণ ঘটানোর পর পাঁচ থেকে ছয়জন অস্ত্রধারী ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গুলি বিনিময়ে ছয় হামলাকারী নিহত হয়েছেন।বান্নু হাসপাতালের মুখপাত্র মুহাম্মদ নওমান বলেছেন, হামলায় ১২ জন নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছেন। তারা সবাই বেসামরিক নাগরিক, যারা ধসে পড়া ভবন ও দেয়ালের নিচে চাপা পড়েছিলেন। হাসপাতালের একটি তালিকা থেকে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে সাতজন শিশু রয়েছে।পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “পাকিস্তানের শত্রুদের অশুভ উদ্দেশ্য কখনোই সফল হতে দেওয়া হবে না।”
এই হামলার পেছনে কারা ছিল তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফগান সীমান্তের কাছের এলাকাগুলোতে পাকিস্তানি পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি তালেবান (টিটিপি) গোষ্ঠীর হামলা বেড়েছে।
এই হামলার আগের দিন সোমবার খাইবার পাখতুনখোয়ার একটি মাদ্রাসায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় ঘটেছিল। এতে স্থানীয় শীর্ষ তালেবান নেতাসহ নিহত হয়েছিলেন ৬ জন।
ইসলামাবাদ-ভিত্তিক বিশ্লেষণকারী গ্রুপ সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের মতে, গত বছরটি ছিল পাকিস্তানের জন্য এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক বছর, যেখানে হামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তান সরকার দীর্ঘদিন থেকে অভিযোগ করে আসছে, আফগানিস্তানের তালেবান শাসকরা সীমান্তের ওপারে টিটিপি যোদ্ধাদের আশ্রয় দিচ্ছে। তবে তালেবান সরকার জোর দিয়ে বলেছে, তারা কাউকে কোনো দেশে সহিংসতার জন্য আফগান মাটি ব্যবহার করতে দেয় না।