1. skmshamim11@gmail.com : Shamim ahmed : Shamim ahmed
  2. news@uttarabusinessnews.com : UTTARA BUSINESS NEWS : UTTARA BUSINESS NEWS
  3. info@www.uttarabusinessnews.com : UTTARA BUSINESS NEWS :
মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে: অধ্যাপক ইউনূস - UTTARA BUSINESS NEWS
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৭ অপরাহ্ন

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে: অধ্যাপক ইউনূস

প্রতিনিধির নাম :
  • প্রকাশিত: বুধবার, ৫ মার্চ, ২০২৫
  • ৩৭ বার পড়া হয়েছে

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারটি আজ বুধবার প্রকাশ পেয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় থাকাকালীন জোরপূর্বক গুমের পাশাপাশি গত বছরের জুলাই ও আগস্টে বিক্ষোভকারীদের গণহত্যার জন্য অভিযুক্ত শেখ হাসিনা।

সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, ‘একটি বিচার হবে। শুধু শেখ হাসিনা নয়, তার সঙ্গে জড়িত সব লোক তথা পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে তার সহযোগীদেরও বিচার করা হবে।’ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত বছরের আগস্টের শুরুতে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে তিনি ভারতেই নির্বাসনে রয়েছেন। নাটকীয় এই পটপরিবর্তনের পর একে একে বের হয়ে আসছে সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ নানা চিত্র।হাসিনার বিরুদ্ধে গোপন আটক কেন্দ্রগুলোর একটি নেটওয়ার্কের তদারকি করার অভিযোগ রয়েছে। এসব গোপন আটক কেন্দ্রে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো, নির্যাতনও করা হতো এবং কয়েকজনকে হত্যাও করা হয়েছিল- আর এই সবই করা হয়েছিল ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের’ ব্যানারে।মানবতাবিরোধী অপরাধ ও দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত হাসিনার বিরুদ্ধে দুটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বাংলাদেশ। অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, (হাসিনাকে ফেরত চেয়ে) তারা ‘আনুষ্ঠানিক চিঠি’ পাঠিয়েছেন কিন্তু নয়াদিল্লি থেকে ‘এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া’ পাওয়া যায়নি।

তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেছেন, হাসিনা অবশ্যই আদালতের মুখোমুখি হবেন, আর সেটা সশরীরে বাংলাদেশে উপস্থিত থেকে হোক বা অনুপস্থিতিতে, ভারতে থেকেই হোক।

অধ্যাপক ইউনূস সম্প্রতি ‘হাউজ অব মিররস’ বা ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত একটি কুখ্যাত গোপন কারাগার পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেছেন, সেখানে তিনি যা দেখেছেন তাতে তিনি হতবাক।

ড. ইউনূস বলেন, এটিই সবচেয়ে কুৎসিত জিনিস যা আপনি দেখতে পারেন, আপনি অনুভব করতে পারেন বা আপনি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।

হাসিনার বিরুদ্ধে তার নিরাপত্তা বাহিনী এবং পুলিশকে ব্যবহার করে শত শত নেতাকর্মীকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার তদারকি করার অভিযোগ রয়েছে। হাসিনা, তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং প্রায় ৮০০ গোপন কারাগারের নেটওয়ার্ক তদারকি করার দায়ে অভিযুক্তদের অনেকেই বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অভিযুক্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িত লোকের সংখ্যা এবং পরিসর (বেশি হওয়ায়) কাজ করতে ‘সময় লাগছে’। তিনি বলেন, সবাই এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। পুরো সরকার এর সঙ্গে জড়িত ছিল। সুতরাং এটা বের করা কঠিন যে- কারা সত্যিই এবং উৎসাহের সঙ্গে এই অপরাধগুলো করছিল, আর কারা উচ্চপদস্থদের আদেশের অধীনে এসব কাজ করেছিল এবং কারা পুরোপুরি এসব অপরাধের সমর্থনকারী না হলেও এই ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে গিয়েছিল।

হাসিনা, নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশকে গত বছরের জুলাই এবং আগস্টে বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস দমন-পীড়নের জন্যও অভিযুক্ত করা হয়েছে। জাতিসংঘ অনুমান করছে, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার আগের দিনগুলোতে প্রায় সরকারের সহিংস দমন-পীড়নে ১৪০০ জন নিহত হয়েছিলেন।

অধ্যাপক ইউনূস ভুক্তভোগীদের পরিবার কত দ্রুত ন্যায়বিচার দেখতে পাবে এবং তার চোখের সামনে সেই বিচার হবে কিনা তা নিয়ে প্রত্যাশা পূরণ করার চেষ্টা করে চলেছেন। এমন অবস্থায় চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে নতুন নির্বাচন হতে পারে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, কিছু অপরাধী শাস্তি পাবে, কিছু তখনও প্রক্রিয়াধীন থাকবে, কিছু তখনও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ও দেশ ছেড়ে পলায়নের পর তার পরিবারের সদস্যসহ অনেকের বিরুদ্ধেই নানা অভিযোগ বের হয়ে আসছে এবং দুর্নীতিবিরোধী তদন্ত চলছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে তাদের একজন ব্রিটিশ লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি শেখ হাসিনার ভাগ্নী।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলাটি খুবই গুরুতর। দেশে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে এবং সবকিছু খতিয়ে দেখা হবে।

মূলত বাংলাদেশে দুর্নীতির তদন্তে নাম আসার পর গত জানুয়ারি মাসে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

এছাড়া বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আগমন অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ওই দেশটির দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধির পর মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সংখ্যালঘু মুসলিমদের সংখ্যা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে সহায়তা করার জন্য তারা এখন একটি ‘নিরাপদ অঞ্চলের’ সম্ভাবনা নিয়ে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করছেন।

তিনি বাংলাদেশের কক্সবাজারে বড় সমস্যার কথাও স্বীকার করেছেন। এখানে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির রয়েছে এবং সেখানে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা আনুমানিক ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে এবং সহিংসতা, মাদক এবং আধাসামরিক কার্যকলাপ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, এই উত্তেজনা ‘হারিয়ে যাবে না’।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট